শুল্কযুদ্ধ নিষেধাজ্ঞা ইতিহাস রাশিয়া
বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক নতুন করে তিক্ত হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক বিবৃতিতে বলেন—“কোনও শুল্কযুদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞা ইতিহাসের স্বাভাবিক গতিকে থামাতে পারবে না।” এই বক্তব্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থনৈতিক হুমকির প্রতিক্রিয়া, যা রাশিয়ার মিত্র দেশ এবং BRICS সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছিল।
মার্কিন নীতি ও অর্থনৈতিক চাপ
শুল্কযুদ্ধ নিষেধাজ্ঞা ইতিহাস রাশিয়া
দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করে আসছে। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিক সীমাবদ্ধতা এবং নতুন শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এই নীতিকে রাশিয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে দাবি করছে।
রাশিয়ার দৃঢ় অবস্থান
শুল্কযুদ্ধ নিষেধাজ্ঞা ইতিহাস রাশিয়া
রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ তাদের উন্নয়ন থামাতে পারবে না। তাদের মতে, জ্বালানি, কৃষি, প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থান থাকার কারণে কোনও অর্থনৈতিক অবরোধ দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হবে না। বরং এসব চাপ রাশিয়াকে আরও স্বনির্ভর হতে এবং বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে উৎসাহিত করছে।
বন্ধুরাষ্ট্র ও BRICS-এর সমর্থন
শুল্কযুদ্ধ নিষেধাজ্ঞা ইতিহাস রাশিয়া
রাশিয়া বর্তমানে BRICS-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, যেখানে রয়েছে ব্রাজিল, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জোটের দেশগুলো একে অপরের সঙ্গে সমমর্যাদাপূর্ণ বাণিজ্য ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখে। জাখারোভা স্পষ্ট করে বলেছেন—বন্ধুরাষ্ট্রগুলো জানে একতরফা চাপ আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী, তাই তারা রাশিয়ার পাশে থাকবে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
ইতিহাসে দেখা গেছে, কিউবা, ইরান বা উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেও তাদের উন্নয়নের ধারা থামানো যায়নি। রাশিয়ার বিশ্বাস, বর্তমান পরিস্থিতিতেও একই ঘটনা ঘটবে এবং বিশ্বের ক্ষমতার ভারসাম্য ক্রমেই বহুপক্ষীয়তার দিকে যাবে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশ জ্বালানি সংকটে পড়েছে এবং দাম বেড়েছে। এদিকে BRICS দেশগুলো বিকল্প আর্থিক ব্যবস্থা ও স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেনের দিকে ঝুঁকছে, যা ডলারের প্রভাব কমিয়ে আনছে।
রাশিয়ার প্রস্তুতি
রাশিয়া বহু বছর ধরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষিখাত শক্তিশালী করা, এশিয়া ও আফ্রিকার বাজার সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে তারা অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা গড়ে তুলেছে।
উপসংহার
রাশিয়ার বার্তা স্পষ্ট—শুল্কযুদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞা সাময়িক চাপ সৃষ্টি করলেও ইতিহাসের ধারাকে বদলাতে পারবে না। বন্ধুরাষ্ট্র ও BRICS-এর সমর্থনে তারা বহুপক্ষীয় বিশ্বব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
-
কোনও শুল্কযুদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞাই ইতিহাসের ধারাকে বদলাতে পারবে না – মার্কিন হুমকির জবাবে রাশিয়ার দৃঢ় অবস্থান
Spread the loveশুল্কযুদ্ধ নিষেধাজ্ঞা ইতিহাস রাশিয়া বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক নতুন করে তিক্ত হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক বিবৃতিতে বলেন—“কোনও শুল্কযুদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞা ইতিহাসের স্বাভাবিক গতিকে থামাতে পারবে না।” এই বক্তব্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থনৈতিক হুমকির প্রতিক্রিয়া, যা রাশিয়ার মিত্র দেশ এবং BRICS সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও লক্ষ্য…
One thought on “কোনও শুল্কযুদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞাই ইতিহাসের ধারাকে বদলাতে পারবে না – মার্কিন হুমকির জবাবে রাশিয়ার দৃঢ় অবস্থান”