
রাজনীতির মঞ্চে কমেডি শো!(Double Engine Government)
বাংলার রাজনীতি এমন এক মঞ্চ, যেখানে প্রতিদিন নতুন নাটক মঞ্চস্থ হয়। দর্শক আমরা, অভিনেতা নেতারা। আর ২০২৫ সাল? যেন একেবারে কমেডি সার্কাস! একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—যিনি দাবি করেন, “আমিই বাংলার দুর্গা, হাতে ত্রিশূল।” আরেকদিকে মোদীজি—যিনি বলেন, “ডাবল ইঞ্জিন চললে তোমাদের কপালে সিঙ্গল সমস্যা থাকবে না।”
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, মহালয়ার চণ্ডীপাঠ আর বিজেপির রাজনৈতিক বক্তৃতা—দুটোই সমান আবেগের উৎসব।
🚂 ‘ডাবল ইঞ্জিন’ নাকি ‘ডাবল ধোঁয়া’?(Double Engine Government)
বিজেপির ফোকাস কীওয়ার্ড হলো—ডাবল ইঞ্জিন সরকার। অর্থাৎ, দিল্লি আর কলকাতায় একই সরকার থাকলে উন্নয়ন হবে এক্সপ্রেস স্পিডে।
কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন—
“ট্রেন কি ইঞ্জিনেই চলে, নাকি রেললাইনেরও দরকার আছে?”
বাংলার জনগণও এখন ভাবছে—এই ট্রেনটা আদৌ ছাড়বে তো? নাকি হাওড়ায় দাঁড়িয়ে শিস বাজাতে-বাজাতে বছর কেটে যাবে!
🪔 মহালয়ার আগে-পরে সফরের রাজনৈতিক পাণ্ডেল(Double Engine Government)
মহালয়া মানেই বাঙালির আবেগ। সকালের আকাশে “মহিষাসুরমর্দিনী” বাজতে না বাজতেই বাজারে আলুর দাম বেড়ে যায়। এই আবেগের সঙ্গেই রাজনীতি মেশাতে এবার ঝাঁপিয়েছে বিজেপি।
- মোদীজি আসছেন আলিপুরদুয়ারে।
- অমিত শাহ আসছেন দমদমে।
- আর পার্টি বলছে—“এই সভাতেই বাংলার ভবিষ্যৎ লুকিয়ে।”
তৃণমূল নেতারা অবশ্য খোঁচা দিচ্ছেন—
“মহালয়ার চণ্ডীপাঠে মহিষাসুর ভয়ে পালায়, কিন্তু বাংলায় মোদী-শাহ এলেই তৃণমূলের প্যান্ডেলে শুধু হইচই হয়।”
🏭 আলিপুরদুয়ার, দুর্গাপুর আর দমদম: সভার ‘তিন তিলক’
- আলিপুরদুয়ার (উত্তরবঙ্গ) → বিজেপির ‘স্ট্রং জোন’। সেখানে সভা মানেই যেন “হাতি খাটে উঠলেই হাততালি।”
- দুর্গাপুর (শিল্পাঞ্চল) → এখানে মোদীজি বলবেন, “কারখানার চিমনি থেকে ধোঁয়া উঠলে উন্নয়ন হয়।” শ্রমিকরা ভাবছে—“ভাই, আগে চাকরি দাও, তারপর ধোঁয়া উঠবে।”
- দমদম (কলকাতা বিভাগ) → শহুরে ভোটারদের বোঝানোই আসল চ্যালেঞ্জ। শহরের বুদ্ধিজীবীরা হয়তো বক্তৃতার মাঝেই বলবেন—“দয়া করে প্রথমে বাংলা উচ্চারণটা শিখুন।”
🎤 মোদী-শাহর স্টাইল বনাম দিদির ডায়ালগ(Double Engine Government)
- মোদী: “ডাবল ইঞ্জিনে বাংলা সোনার বাংলা হবে!”
- শাহ: “বাংলায় আর সিন্ডিকেট চলবে না!”
- মমতা: “আমার নাম মমতা, আমি কাউকে ভয় করি না। ডাবল ইঞ্জিনে যদি দেরি হয়, আমি নিজেই গাড়ি টানব।”
দর্শকরা? হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। কারণ এ লড়াই এখন আর কেবল রাজনীতির নয়, এটা একেবারে ডায়ালগবাজি প্রতিযোগিতা!
🎪 দুর্গাপুজোর পর ছয়-ছয়টা সভা: রাজনৈতিক রঙিন মেলা(Double Engine Government)
পুজো মানেই প্যান্ডেল হপিং, খিচুড়ি খাওয়া, আর রাজনৈতিক নেতাদের সভা। বিজেপি ঘোষণা করেছে—পুজোর পর আরও ছ’টা সভা!
একজন সাধারণ ভোটারের ভাষায়—
“প্যান্ডেল দেখে ক্লান্ত হলে একটু বিজেপির সভায় বসব, হাসির ডোজ তো মিলবেই।”
🎭 রাজনৈতিক ব্যঙ্গ-চিত্র: বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ(Double Engine Government)
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করছেন খুব গম্ভীরভাবে—
- উত্তরবঙ্গে সভা মানে গরু, চা আর উন্নয়ন—এই তিন মন্ত্র।
- দুর্গাপুরে সভা মানে চিমনি, কয়লা আর চাকরি—এই তিন মন্ত্র।
- দমদমে সভা মানে বুদ্ধিজীবী, বই আর বক্তৃতা—এই তিন মন্ত্র।
কিন্তু জনগণের কাছে এগুলো এখন মজার কৌতুক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
🥁 তৃণমূলের কটাক্ষ: “এটা রাজনীতি না, কমেডি শো!”(Double Engine Government)
তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য—
- “মোদী-শাহ বাংলায় এলেই জনসভা মানে কৌতুক শো।”
- “বাংলার মানুষ শুধু হাততালি দেয়, ভোট দেয় না।”
- “ডাবল ইঞ্জিনে যদি এত উন্নয়ন হয়, তবে উত্তরপ্রদেশে গঙ্গা এতদিনে হিমালয় পর্যন্ত পৌঁছে যেত।”
🕵️ ভোটারদের ভাবনা: হাসির মধ্যে সিরিয়াস প্রশ্ন(Double Engine Government)
বাংলার সাধারণ ভোটাররা এখন হাসতে-হাসতে ভাবছে—
- সত্যিই কি বিজেপি রাজ্যে আসতে পারবে?
- নাকি আবারও “৭৭ সিটে থেমে যাওয়া ট্রেন”?
- নাকি ডাবল ইঞ্জিনের বদলে সিঙ্গল হ্যান্ড ব্রেক হয়ে যাবে বাংলার রাজনীতি?
রাজনীতির হাসির ট্রেন
সব মিলিয়ে, মহালয়ার আগে-পরে মোদী-শাহর সফর, পুজোর পরে আরও ছয় সভা—সবকিছু এখন বাংলায় একেবারে কমেডি নাটকের মতো চলছে।
বিজেপি চাইছে মানুষ হেসে-হেসে তাদের ভোট দিক। তৃণমূল চাইছে মানুষ হাসতে-হাসতে ভোট না দিক। আর জনগণ? বলছে—
“দেখা যাক ২০২৬-এ কোন ইঞ্জিন ছাড়ে—ডাবল ইঞ্জিন, না মমতার সিঙ্গল ইঞ্জিন।”
- 🛤️ ডাবল ইঞ্জিন ট্রেন বনাম বাংলার লোকাল ট্রেন ব্যঙ্গ
- 🎭 রাজনৈতিক নাটক—নেতাদের ‘ডায়ালগ যুদ্ধ’
- 🍲 দুর্গাপুজোর ভোগ বনাম রাজনৈতিক খিচুড়ি
- 📢 জনসভায় জনগণের রিঅ্যাকশন: হাসি, হাই তোলা আর সেলফি
- 🔮 ভবিষ্যৎ ভাবনা—২০২৬-এ আসলেই কী হতে পারে?
🛤️ ডাবল ইঞ্জিন বনাম বাংলার লোকাল ট্রেন(Double Engine Government)
বাংলার মানুষ ট্রেনের সঙ্গে খুব পরিচিত। সকালে অফিস যাত্রীদের ‘সাবার্বান ট্রেন’ না চললে যেমন বিশৃঙ্খলা হয়, তেমনি রাজনীতির ট্রেনও এখন বিশৃঙ্খলার চূড়ান্ত।
- বিজেপি বলে: “ডাবল ইঞ্জিনে ট্রেন ছুটবে এক্সপ্রেস স্পিডে।”
- জনগণ বলে: “ভাই, আগে লোকালটাই সময়মতো ছাড়াও, তারপর এক্সপ্রেসের কথা ভাবো।”
- তৃণমূল বলে: “ডাবল ইঞ্জিন ট্রেনের কোনো দরকার নেই, আমাদের লোকাল ট্রেনেই মানুষ চড়ে।”
এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ভোটাররা বুঝতে পারছে না—কাকে ভোট দিলে ট্রেনটা হাওড়া থেকে ছাড়বে, আর কাকে ভোট দিলে শিয়ালদহে আটকে যাবে।
🎭 রাজনৈতিক নাটক: নেতাদের ডায়ালগ যুদ্ধ(Double Engine Government)
রাজনীতিতে এখন কেবল সভা নয়, ডায়ালগ যুদ্ধ চলছে।
- মোদীজি বলেন: “আমি বাংলার উন্নয়ন চাই, তাই ডাবল ইঞ্জিন চাই।”
- মমতা বলেন: “আমি বাংলার মাটি চাই, দিল্লির দাদাগিরি চাই না।”
- অমিত শাহ বলেন: “বাংলায় সিন্ডিকেটের রাজনীতি বন্ধ করব।”
- ডেরেক ও’ব্রায়েন (তৃণমূলের মুখপাত্র) বলেন: “বন্ধু, আগে বাংলা উচ্চারণ ঠিক করুন, তারপর সিন্ডিকেট বন্ধ করবেন।”
এ যেন একেবারে নাটকের মঞ্চ, যেখানে দর্শকরা চা হাতে বসে আছে, আর অভিনেতারা ডায়ালগ ছুঁড়ে যাচ্ছে।
🍲 দুর্গাপুজোর ভোগ বনাম রাজনৈতিক খিচুড়ি(Double Engine Government)
দুর্গাপুজোর সময় বাঙালিরা মায়ের ভোগ খেতে ভালোবাসে। খিচুড়ি, লাবড়া, বেগুনি—সব মিশিয়ে একেবারে আনন্দমেলা।
কিন্তু রাজনৈতিক খিচুড়ি?
- বিজেপি বানাচ্ছে ডাবল ইঞ্জিন খিচুড়ি।
- তৃণমূল বানাচ্ছে দিদির উন্নয়ন ভোগ।
- সিপিএম বানাচ্ছে পুরনো দিনের লাল খিচুড়ি।
- কংগ্রেস বানাচ্ছে, কিন্তু কে খাবে তা তারা নিজেরাও জানে না।
জনগণ অবশ্য বলছে—
“রাজনৈতিক খিচুড়ি যতই পরিবেশন করুন, আমাদের খিদে মেটে না। কাজ চাই, চাকরি চাই, দাম কম চাই।”
📢 জনসভায় জনগণের রিঅ্যাকশন: হাসি, হাই আর সেলফি(Double Engine Government)
মোদী বা শাহর সভায় ভিড় হয় সত্যি, কিন্তু ভিড়ের অর্ধেকই সেলফি তুলতে আসে।
- কেউ আসে মোদীজির দাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করতে।
- কেউ আসে শাহজির গম্ভীর মুখ দেখে মিম বানাতে।
- কেউ আবার আসে বক্তৃতার মাঝেই হাই তুলতে।
এক ভোটার বলছিলেন—
“জনসভা আসলে এখন ফ্রি এন্টারটেইনমেন্ট। কোনো টিকিট লাগে না, শুধু একটু ধাক্কাধাক্কি করতে হয়।”
🎪 রাজনীতি মানেই এখন রোড শো + কমেডি শো
বাংলার মাটিতে রোড শো মানেই একেবারে সিনেমা শ্যুটিংয়ের মতো। রঙিন গেট, লাইট, ডিজে, মাইক—সবকিছু। শুধু পার্থক্য একটাই—
- সিনেমায় হিরো মারধর করে খলনায়ককে হারায়।
- রাজনীতিতে হিরো শুধু বক্তৃতা দেয়, ভোটে খলনায়ক কখনও জিতে যায়।
📜 বিজেপির স্লোগান বনাম তৃণমূলের জবাব
- বিজেপি: “ডাবল ইঞ্জিনে উন্নয়ন।”
- তৃণমূল: “ডাবল ইঞ্জিন মানে ডাবল ধোঁকা।”
- বিজেপি: “বাংলা বদলাব।”
- তৃণমূল: “বাংলাকে দিল্লির এজেন্ট হতে দেব না।”
এ যেন বাচ্চাদের ছড়া প্রতিযোগিতা—
একজন বলছে, “আমার পেন্সিল সুন্দর।”
অন্যজন বলছে, “আমার রাবার সুন্দর।”
🕺 রাজনৈতিক সভায় সাংস্কৃতিক কর্মসূচি
একটা সময় রাজনৈতিক সভায় গান-বাজনা হতো। এখনো অনেক সভায় দেখা যায়—
- মাইক টেস্ট করতে গিয়ে ডিজে বাজছে, “বুম বুম বোলে।”
- নেতারা মঞ্চে ওঠার আগেই, ডান্স পারফর্ম করছে স্থানীয় ক্লাব।
- জনসভায় আসা বয়স্কা দিদিমারা বলছেন, “এটা সভা না, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।”
🌍 ২০২৬-এর ভবিষ্যৎ ভাবনা: সিরিয়াস না কমেডি?
প্রশ্ন হচ্ছে—২০২৬ সালে বাংলার মানুষ কাকে ভোট দেবে?
- বিজেপি আশা করছে, ডাবল ইঞ্জিন মানেই উন্নয়নের এক্সপ্রেস।
- তৃণমূল আশা করছে, দিদির নামেই চলবে ভোট।
- ভোটাররা ভাবছে—“আমাদের শুধু ডাবল ডোজ কাজ চাই, ডাবল ইঞ্জিন বক্তৃতা নয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন—
“বাংলায় এখন ভোট একটা সিরিয়াস খেলা হলেও, রাজনৈতিক নেতারা এটাকে কমেডি শো বানিয়ে ফেলেছেন।”
ভোট মানে শেষ পর্যন্ত হাসির খেলা
শেষ পর্যন্ত, মহালয়ার আগে-পরে মোদী-শাহর সভা, পুজোর পরে ছয়টা র্যালি—সবই এক রাজনৈতিক কৌতুক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিজেপি বলছে, “আমরা আসছি।”
তৃণমূল বলছে, “আমরা আছি।”
সিপিএম বলছে, “আমরাও আছি, কিন্তু কেউ খেয়াল করছে না।”
আর জনগণ বলছে—
“যে-ই আসুক, আগে আমাদের পকেট বাঁচাও।”