RESEARCHBANGLA.COM
ট্রাম্প ভারতের উপর নিজস্ব শুল্ক ব্যাপকভাবে বাড়াতে পারেন:
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের প্রত্যাশায় রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি কিছু চমকপ্রদ বাণিজ্যিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি (Trump India tariff hike) এর সম্ভাবনা। এই ঘোষণায় ভারতের বাণিজ্য মহলে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি ও অতীত অভিজ্ঞতা
২০১৭-২০২১ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ‘America First’ নীতির ভিত্তিতে একাধিক দেশ—বিশেষ করে চীন এবং ভারত—এর উপর শুল্ক চাপিয়েছিলেন। ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি ছিল তার সেই নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এ সময়ে ভারত থেকে আমদানি হওয়া ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, জুতা, টেক্সটাইল, এবং মোটরসাইকেলের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়।
ভারতের সাথে ট্রাম্পের টানাপোড়েন
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ হলেও, ট্রাম্প শাসনকালে Trump India tariff hike নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন যে, ভারত তাদের পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রে কম শুল্ক দেয়, কিন্তু আমেরিকান পণ্যের উপর ভারতে বেশি শুল্ক আরোপ করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৯ সালে জিএসপি (Generalized System of Preferences) থেকে ভারতকে বাদ দেওয়া হয়।
শুল্ক বৃদ্ধি কীভাবে ভারতীয় অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে?
RESEARCHBANGLA.COM
ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি (Trump India tariff hike) হলে, ভারতের কিছু নির্দিষ্ট রপ্তানি খাত, যেমন—ফার্মাসিউটিক্যালস, জুয়েলারি, চামড়া শিল্প এবং টেক্সটাইল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারতে তৈরি এই সব পণ্য মার্কিন বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না, ফলে ভারতের রপ্তানি হ্রাস পাবে, কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
মোদি সরকারের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ
বর্তমান মোদি সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি ও কৌশলগত অংশীদারিত্বে জোর দিয়েছেন। কিন্তু Trump India tariff hike মোদি সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারা যাতে দ্রুত মার্কিন প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব হ্রাস করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
ভোটের রাজনীতি ও ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্প মূলত আমেরিকান উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থানকে রক্ষা করার অজুহাতে ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি (Trump India tariff hike) এর কথা বলছেন। এতে করে Rust Belt-এর মতো শিল্প অঞ্চলগুলিতে তাঁর ভোটব্যাংক শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু এটি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য বিপদজনক বার্তা দিতে পারে।
চীন বনাম ভারত: ট্রাম্পের বাণিজ্য বৈষম্য?
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল—ট্রাম্প কি চীনের সঙ্গে যেমন শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছিলেন, ভারতকেও কি একই পথে ঠেলে দেবেন? যদিও চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত ছিল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে, ভারতের ক্ষেত্রে বিষয়টি মূলত Trump India tariff hike তথা বাণিজ্য সম্পর্কিত।
ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া
ভারত সরকার ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও, পর্দার আড়ালে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এবং বাণিজ্য মন্ত্রক কূটনৈতিকভাবে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বাজার বিশ্লেষণ
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় এলে বিশ্ববাণিজ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হবে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, Trump India tariff hike শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
শুল্ক বৃদ্ধির কিছু সম্ভাব্য ইতিবাচক দিক
যদিও বেশিরভাগ বিশ্লেষক ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি (Trump India tariff hike) কে নেতিবাচক বলেই বিবেচনা করছেন, তবুও কিছু কিছু দিক থেকে ভারত উপকৃত হতে পারে
- দেশীয় উৎপাদন শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া হবে
- বিকল্প বাজারে প্রবেশের চেষ্টা বাড়বে
- বৈচিত্র্যময় রপ্তানি কৌশল তৈরি হবে
ভারতীয় ব্যবসায়িক মহলের উদ্বেগ
RESEARCHBANGLA.COM
ভারতের ব্যবসায়িক মহল—বিশেষ করে FICCI, CII, এবং ASSOCHAM—এই সম্ভাব্য Trump India tariff hike নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করছে, এটি মধ্যম ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
চূড়ান্ত বিশ্লেষণ: আগাম প্রস্তুতির গুরুত্ব
যদি ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্ট হন এবং তিনি ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন, তবে ভারতকে তার বৈদেশিক বাণিজ্য কৌশল নতুন করে সাজাতে হবে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বাণিজ্যিক কূটনীতি ও আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে জোর দিতে হবে।
2 thoughts on ““ট্রাম্পের বিস্ফোরক ঘোষণা: ভারতের উপর বিশাল শুল্ক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ধ্বংস করতে পারে!””